আসসালামু আলাইকুম। স্যার,আমি আশরাফুল ইসলাম। স্যার, আমি বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মান দ্বিতীয় বর্ষে (অর্থনীতি) অধ্যায়নরত। স্যার, আমি লেখাপড়া শেষ করে আমার পেশা হিসাবে ব্যাংকিং সেক্টরকে গ্রহন করতে চাই। স্যার, আপনার কাছে কিছু পরামর্শ চেয়ে আমার আকুল আবেদন।
১। এখন থেকে আমাকে কিভাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে?
২। সহায়ক গ্রন্থ হিসাবে এখন থেকে আমার কোন বইগুলো নিয়মিত চর্চা করা উচিত?
৩। অনার্স শেষ করে কোনটি করা আমার জন্য ভালো হবে, বর্তমান বিষয়(অর্থনীতি)
অনুযায়ী জেনারেল মাস্টার্স( গঝঝ) নাকি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে (গইঅ)পরামর্শ: শেষ প্রশ্ন থেকে শুরু করি। আপনি শুরুতেই বলেছেন ব্যাংকিং সেক্টরে ক্যারিয়ার করার ইচ্ছা। সে হিসেবে অনার্স শেষ করার পর সরাসরি অর্থনীতিতে মাস্টার্স করাই শ্রেয় হবে বলে আমার ধারণা।
এতে সময় ও অর্থ দু’টোই সাশ্রয় হবে। তাছাড়া ব্যাংকে চাকরির ক্ষেত্রে অর্থনীতি বিষয় যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য। তবে চাকরিকালীন হাতে সময় থাকলে প্রয়োজন অনুযায়ী এমবিএ করার সুযোগতো থাকছেই। দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রশ্নে আপনি জানতে চেয়েছেন কোন বইগুলো চর্চা করা উচিৎ এবং এখন থেকে কিভাবে প্রস্তুতি নেব। এর আগেও একবার একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলাম যারা অনার্সের প্রথম বা দ্বিতীয় বর্ষ থেকে প্রস্তুতি শুরু করবেন তাদের হাতে অনেক সময় থাকে। তাই তারা সময় নিয়ে বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি নিতে পারেন। আগের প্রশ্নগুলো দেখে নিয়ে শুরু করতে পারেন। এতে কোন বিষয়ে আপনার দুর্বলতা সেটি বোঝা যাবে। ফলে কোন বই কেনা লাগবে, কোথায় বেশি সময় দিতে হবে কিভাবে এগোতে হবে সে বিষয়ে নিজের মধ্যে একটা পরিকল্পনা চলে আসবে। প্রাইভেট ব্যাংকের পরীক্ষা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিআইবিএম বা আইবিএ পরীক্ষার দায়িত্বে থাকে। তাই এগুলোতে ভর্তি গাইড দেখে পড়াশোনা করতে পারেন ব্যাংকের ক্ষেত্রেও কাজে দেবে। ইংরেজির জন্য গধংঃবৎ ঊহমষরংয বইটা ফলো করা যেতে পারে প্র্যাক্টিস করার জন্য। তবে যেসব টপিক থেকে প্রশ্ন হয় শুধু সেসব টপিকগুলো ভালোভাবে পড়লেই হবে।
প্রাইভেট ব্যাংকের পরীক্ষায় সবসময় ১০-১৫ টা ঝুহড়হুস, অহঃড়হুস এবং অহধষড়মু আসে। তাই ভোকাবুলারির উপর অনেক গুরুত্ব দিতে হবে। এর জন্য সাইফুর’স স্টুডেন্ট ভোকাবুলারি, সাইফুর’স ভোকাবুলারি বইগুলো পড়লে মোটামুটি কমন পাওয়া যায়। এর বাইরে এজঊ ইরম ইড়ড়শ, ডড়ৎফং ংসধৎঃ ইত্যাদি বইও পড়তে পারেন। সাইফুর’স স্টুডেন্ট ভোকাবুলারি বইটা অনেক ছোট এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ডড়ৎফ গুলো দেয়া আছে এটাতে তাই এটা প্রথমে শেষ করে ফেলতে পারলেও অনেকটা এগিয়ে থাকা যাবে।ম্যাথের জন্য বিগত সালের প্রশ্নগুলো প্রথমে বিশ্লেষণ করে যেসব টপিক থেকে প্রশ্ন এসেছে শুধু সেসব টপিক শেষ করে ফেলতে হবে যেকোন বই থেকে।
এমসিকিউ ম্যাথের জন্য খাইরুল’স বেসিক ম্যাথ বইটা আমি সাজেস্ট করবো। বিগত সালের প্রশ্ন থেকে এই অংশে অনেক প্রশ্ন রিপিট হয়।থ প্রিলির জন্য আরিফুর রহমান প্রিলি বই থেকে দাগিয়ে দাগিয়ে বিগত সালের ম্যাথ গুলো সুন্দরভাবে বুঝে বুঝে সলভ্ করবেন অধ্যায় ভিত্তিক ম্যাথ সলভ্ করার জন্য শযধরৎঁষ ধফাধহপবফ বইটি আপনার জন্য অনেক ভাল হবে( আমার মতে) ।
বইটির কলাকৌশলী ও একই নিয়মের আলাদা আলাদা অংশের ব্যাখ্যাসমূহ সুন্দরভাবে দাগিয়ে দাগিয়ে প্রতি টি অধ্যায় আয়ত্ত করতে পারলে ইনশাআল্লাহ অনেকটা ম্যাথ ভীতি দূর হয়ে যাবে । কেননা এখানে সহজ ,কঠিন ,ওয়েব সব কিছুরই স্বাদ পাবেন।বিভিন্ন গ্রুপে বড় ভাই/ আপুরা অনেক ধরনের ম্যাথ শেয়ার করেন , এসব খাতায় লিখে রাখবেন সমাধানসহ । আর সবসময় ম্যাথের ট্রিকিগুলো শিখার চেষ্টা করবেন। মনে রাখবেন প্রিলি পরীক্ষায় খুব কম সময়ে অনেক প্রশ্ন সলভ্ করতে হয় । ১ থেকে ৩০ পর্যন্ত অংকের বর্গসমূহ অর্থাৎ ১৯দ্ধ১৯= ৩৬১ এভাবে ৩০ পর্যন্ত মুখস্থ অবশ্যই করে রাখবেন । মনে রাখবেন গুন করতে গিয়ে অনেক সময় (সময় )নষ্ট হয়ে যায় ।
তাই পরীক্ষার হলে ০৫ সেকেন্ড বাঁচলেও আপনার লাভ হবে। এছাড়া ও ১১ ঘরের নামতা ট্রিকিটাও মুখে মুখে হিসাব করবেন।যেমন- ১৪দ্ধ ১১ = ১(১+৪) ৪= ১৫৪ । এভাবে মুখে মুখে হিসাব করা শিখবেন ।সাধারণ জ্ঞানের জন্য সাম্প্রতিক সাধারণ জ্ঞান অনেক বেশি আসে। তাই প্রতি মাসের কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স কিনে সেটা ভালোভাবে পড়ে শেষ করবেন। বাংলাদেশের সম্প্রতি ক্রিকেট ম্যাচ থেকে প্রায়ই প্রশ্ন আসে। সম্প্রতি কোন ম্যাচ কতো রানে/কতো উইকেটে জয়লাভ করেছে সেসব প্রশ্ন আসে। এর বাইরে বিগত সালের প্রশ্নগুলো অনুসরণ করে সে অনুযায়ী প্রিপারেশন নিতে পারেন। আইকিউ পার্টটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ এখানে প্রশ্ন থাকে ৬-৮ টা কিন্তু প্রতিটা প্রশ্নে ১.৫ থেকে ২ নম্বর করে থাকে। তাই এটাতে অবশ্যই ভালো করতে হবে। এর জন্য সাইফুর’স অহধষুঃরপধষ চুুঁষব বইটা পড়তে পারেন, এটাই যথেষ্ট। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হুবহু রিপিট হয় এই বই থেকে। তাছাড়া বিগত সালের প্রশ্ন থেকেও অনেক রিপিট হয় এই অংশে। এমসিকিউ চাকরি প্রার্থীদের জন্য এটি টিকে লড়াই আর নিয়োগকর্তাদের কাছে এই বাদ দেওয়ার পদ্ধতি। এই অংশে ভাল করার জন্য সময় সচেতনতা, তাৎক্ষনিক বুদ্ধিমত্তা, সার্বক্ষনিক মনোযোগ ও মনোবল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ভুল উত্তরের জন্য নম্বর কর্তন হতে পারে বলে সাবধানতাও জরুরি।@ নাজমুল হুদাপেশা-পরামর্শক, লেখক ও ডিডি, বাংলাদেশ ব্যাংকhttps://www.facebook.com/nazmulhuda.author/
774 Comments5 SharesLikeCommentShare